পাসপোর্ট অফিসে অসুস্থ ও বৃদ্ধদের সেবা দিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন আনসার সদস্য ওয়াহিদুজ্জামান
০৭ জুলাই, ২০২৩, 10:39 PM
NL24 News
০৭ জুলাই, ২০২৩, 10:39 PM
পাসপোর্ট অফিসে অসুস্থ ও বৃদ্ধদের সেবা দিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন আনসার সদস্য ওয়াহিদুজ্জামান
কক্সবাজার অফিস :
পাসপোর্ট করতে আসা অসুস্থ, অসহায় ও বৃদ্ধ লোকজনদের মানবিক সেবা দেয়া যেন আনসার সদস্য মোঃ ওয়াহিদুজ্জামানের নেশা। বৃদ্ধ, অসুস্থ ও অসহায় কোনো ব্যক্তি পাসপোর্ট অফিসে সেবা নিতে এলেই সবার আগে ছুটে যান এই যুবক।
চট্টগ্রাম পাসপোর্ট অফিসে নিয়মিত টহলে থাকা আনসার সদস্য মোঃ ওয়াহিদুজ্জামান নিজের কাজের পাশাপাশি প্রতিদিন অসংখ্য মানুষের সেবা দিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন। সেবা নিতে আসা বৃদ্ধ ও অসুস্থ লোকজন তার আন্তরিকতা ও ভালোবাসা পেয়ে প্রাণ খুলে দোয়া/ আশির্বাদ করেন।
পাসপোর্ট অফিসে সেবা গ্রহণ করতে আসা রোগীদের হুইল চেয়ারের ব্যবস্থা , পানি সরবরাহ করা, রোগীদের এম্বুলেন্স থেকে নামা ও দীর্ঘলাইনের ভোগান্তি এড়িয়ে ফিঙ্গার প্রিন্টসহ প্রয়োজনীয় কাজ দ্রুত শেষ করে চলে যাওয়া পর্যন্ত সে সার্বক্ষণিক সাথে থাকেন।
গত বৃহস্পতিবার (০৬ জুলাই) চট্টগ্রাম বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসে গিয়ে এমন দৃশ্য দেখা যায়।
পাসপোর্ট অফিসে সেবা গ্রহণ করতে আসা অসুস্থ ব্যক্তি আব্দুল হালিম জানান,দীর্ঘদিন ধরে আমি জটিল রোগে ভুগছি। চিকিৎসার জন্যে এখন বিদেশ যাওয়া প্রয়োজন। পাসপোর্ট অফিসে এসে দেখি দীর্ঘলাইন। প্রথমে এই লাইন দেখে পাসপোর্ট করার স্বাদ মিঠে গিয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ এক আনসার সদস্য এসে আমার হুইল চেয়ারসহ সে নিজে গিয়ে ফিঙ্গার প্রিন্ট দিতে সহযোগিতা করেছে। আমি তার জন্য মন থেকে দোয়া করি।
ওমরাহ করার উদ্দেশ্যে পাসপোর্ট করতে আসা কয়েকজন ব্যক্তি জানান, দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকায় সে আমাদের পানি সরবরাহ করেছে। আমরা বয়স্ক মানুষ, লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে কষ্ট হওয়ায় সে নিজ থেকে এসে আমাদের ফিঙ্গার প্রিন্ট দিতে সহযোগিতা করেছে। এবং আমাদের যাবতীয় কাজ সে নিজ উদ্যোগে বিনা মূল্যে করে দিয়েছে। আমরা আল্লাহর ঘরে ওমরাহ করতে গেলে ওই ছেলের জন্য মনখুলে দোয়া করবো।
আনসার সদস্য মোঃ ওয়াহিদুজ্জামান। তিনি কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার শাপলাপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা।সে ২০১৯ সালে শাপলাপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন। পরে সরকারি মাতামুহুরী কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। এইচএসসির পর আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীতে যোগদান করেন তিনি। সেই থেকে মানব সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখেন ওয়াহিদুজ্জামান।
ওয়াহিদুজ্জামান জানান , পাসপোর্ট করতে আসা অসুস্থ, বৃদ্ধ ও অসহায় রোগীদের সেবা করে আমি আনন্দ পাই। আমার চাকরির শুরুতেই দায়িত্ব ছিল চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে অসহায় রোগীদের আর্তনাত দেখে মন স্থীর করলাম, যেখানে ভোগান্তি সেখানেই সাধ্যমতো আমি অসহায়দের সেবা করবো।
এখানে এসে অনেকেই নিয়ম-কানুন বুঝেন না । ফলে বৃদ্ধ ও রোগীদের ভোগান্তি পোহাতে হয়। যেমন, ফরম পূরণের পদ্ধতি, পূরণকৃত নমুনা ফরম, ই-পাসপোর্ট এর বিভিন্ন নিয়ম-কানুন, সরকারি নির্দেশনাসহ নানা তথ্য দিয়ে তাদের সহায়তা করি। রোগীরা পাসপোর্ট করতে এসে বিভিন্ন হয়রানির শিকার হয়। অসুস্থ রোগীরা সাধারণ মানুষের মত দীর্ঘলাইনে দাড়াতে পারে না। তাই রোগীরা যাতে তাড়াতাড়ি তাদের প্রয়োজনীয় কাজ সেরে চলে যেতে পারে সে দিকে আমি খেয়াল রাখি।
অনেক রোগী ও বৃদ্ধদের নিজের পকেটের টাকা খরচ করে পানিসহ বিভিন্ন সামগ্রী নিজের সাধ্যমতো বিলিয়ে দেন ওয়াহিদুজ্জামান।